শব্দ যেখানে শেষ হয় সুরের সেখানে আরম্ভ সারাদিন পরিশ্রম করে শব্দ তার ক্লান্ত শরীর আছড়ে ফেলে তীরভূমিতে তার সামনে সমুদ্র সেই সমুদ্রের নাম সুর, ধ্বনি, সঙ্গীত ♪ আমার মনে পড়ছে আমার নিজের জীবনের এক শোকের প্রহর পনেরো ষোল দিন হল মা চলে গেছেন কিন্তু কোন আগ্যাত কারনে একবারও কান্না বেরিয়ে আসেনি বুকে একটা পাথর, সহজ ভাবেই চলা ফেরা করছি না না সব আঁচার মেনে ক্রিয়া কর্ম করছি আর পাথরটা চেপে বসছে চারপাশে যারা ছিল তারা ভাবছে, এমন কি বলছেও আমি খুব শক্ত আছি প্রশংসার্থেই বলছে, এটা কি খুব ক্রিতিত্তের ব্যাপার কাঁদবেন না আপনি, প্রেমের মতো সুখ যখন আসে জীবনে তখন নতুন কিছু জানা যায় রাতে শুতে গেলে দম আঁটকে ধরে উঠে বাইরে বারান্দায় বসে থাকি সন্ধে বেলায় এক বন্ধু l p record চালাল তার ঘরে উপরে বিলায়েত খানের নাম Record ঘুরছে ধীরে ধীরে দোতালা ঘরের জানলা দিয়ে নারকেল গাছের পাতা, আকাশ আর তারা নারকেল গাছের পাতা একটু দুলছে হাওয়ায় আকশও দুলছে, তারারা দুলছে না তো তারের উপর এক এক লম্বা লম্বা মিরের ধির বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে বুক ফালা ফালা করে আর আমার পাথর বলে হু হু করে জল বেরিয়ে আসছে চোখ দিয়ে আমার মাত্রি তর্পণের গঙ্গা জল খাঁ সাহেবের সেই দারবারি কালারা বিলায়েত খাঁ বলেছেন দারবারি কালারা হল রাজার চোখে জল কিন্তু নির্জনের এই অশ্রুপাত শুধু রাজার কেন হবে খাঁ সাহেব আমার মত যারা সাধারণ যারা সঙ্গীতে নিরক্ষর তাদের সবার গোপন চোখের জল পূর্ণ হয়ে ধরা আছে আপনার ওই দারবারি কালারায় যে ভাবে তৃষ্ণার্ত হরিণ যায় সরবরে জল তার পিপাসা নিবারণ করে কিন্তু সে জানে না, জলের উপাদান কি লম্বা দৌরের পর থেমে দাড়িয়ে যেভাবে নিশ্বাস নেয় ঘোড়া, অথচ জানতে পারে না কি দিয়ে তৈরি বাতাস সেই ভাবে বিলায়েত খাঁ সাহেবের সঙ্গীত আমরা ভালোবেসেছি ব্যকারন না জেনে শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা করো দেখবে নদীর ভেতর, মাছের বুক থেকে পাথর ঝড়ে পরছে একটা শোনা গল্প বলি সামনের সারিতে বসে এক সুন্দরী তার makeup সারিয়ে নিচ্ছিলেন সেতার হাতে বিলায়েত তে দেখে বলে উঠলেন কার রূপ বেশি মহোদয়া আপনার না এই সঙ্গীতের বলে নিজের সেঁতার কে দেখালেন শক্তির কবিতায় আছে কি বেশি সুন্দর চাঁদ তুমি না ওই চাঁদের নিচে পাগল তোমার চেয়ে থাকা কোথায় যে দুর্দান্ত এক পাগলও ছিলেন বিলায়েত খান সাহেব বিলায়েত সমগ্র প্রেক্ষা গ্রিহ কে খেপিয়ে তুলেন তারে এক একটি আঘাত করছে এক একটা দীর্ঘ দীর্ঘতর মির টানছেন অভাবনীয় সব খর বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে আর বসন্ত ক্ষত লাঞ্ছিত কঠোর মুখের ওপর এসে পরছে উল্লাস ও দম্ভের চাপ যখন তিনি বাজান চোখ বন্ধ করার অবকাশ নেই চোখ খুলেও নেই সস্থি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠা এক আনন্দ চলেছে শিখরের দিকে কিন্তু শিখরে সে পৌঁছোচেনা, একে বলা যায় এগনি যত ছোটই হোক বাজনা, যত অল্প সময়েরি হয় এই অনুভূতি এই রসাওয়ন স্রোতার ভিতর চলতে থাকে বলেই এই বাজনা কে বলা যায় উন্মাদ, ক্ষেপীয়ে তোলা সমস্ত মাধুর্য লুণ্ঠন করে এইখানে তার বাজনার আসল শাসন বিলায়েত চলে গেলেন রইলাম আমরা আমরা যারা অগণিত শ্রোতা সাধারণ আমরা যারা তীরভূমি থেকে একটু দূরে দারাবার সুযোগ পেয়েও দেখতে পেয়েছি সমুদ্রকে তার বাজনা রয়ে গেলো আমাদের প্রেম, শোক, দুঃখ জাপনের সঙ্গী হয়ে Record-এ Cassade-এ যে বাজনা শুনতে শুনতে মনে মনে আমরা কেও হয়ত দেখেতে পাব বাদনরত বিলায়েতকে আলাপের মাঝখানে কয়েক মুহূর্ত থেমে সেতার হাতে তাকিয়ে আছেন কলা মন্দিরের পিছনের দেয়ালে এক পলক আগে স্বর্গ নেমেছিল তার সামনে এখনি আবারো আসবে তাতে ভুল নেই মাঝখানে আমাদের মনে পরে যাবে, কে বেশি সুন্দর চাঁদ তুমি না ওই চাঁদের দিকে পাগল তোমার চেয়ে থাকা হ্যাঁ, চেয়ে থাকা বিলায়েত এর সঙ্গীতও শেষ পর্যন্ত একটি দৃষ্টি অলৌকিক চোখ যে চোখে চোখ রাখলে জীবনের সমস্ত দৈন থেকে আমরা সৌন্দর্যের দিকে উঠে যেতে পারি ♪ তরঙ্গ যায় তরঙ্গ ফিরে আসে গান বেধে দেও নিশ্বাসে নিশ্বাসে ঘাস খুঁজে এনে কেও পায় মরুভূমি ঢেকে দিতে হয় তাই শিখিয়েছো তুমি তেপান্তরের রোদ্দুরে রোদ্দুরে সারাদিন ধরে বালির রাস্তা ঘোরে কি করে জাগাব পুষ্করিণীর জল তুমি মনে মনে বলে গেছো আবিরল তুমি কি একলা, তুমি কি সঙ্গী চাও তাই ভোরবেলা ঘুম থেকে ডেকে নেও তাই মাঠে মাঠে এত কি গাছের দল দার করিয়েছ পাখীদের সম্বল খড়কুটোগুলি ছরিয়ে রেখেছ মাঠে কুড়োতে কুড়োতে আমার তো বেলা কাটে সন্ধে বেলায় ফিরে এসে দেখি কেও আমার খাতায় ঢেলে দিয়ে গেছে ঢেউ ঢেউগুলি যায় ঢেউগুলি ফিরে আসে গান বেধে নি নিশ্বাসে নিশ্বাসে